দুপুর ও রাতে কখন খাবার খাবেন, দু’বেলার মধ্যে কতক্ষণ ব্যবধান থাকা উচিত


সময় ডেস্ক :    |    ০৯:৪৩ এএম, ২০২৫-০১-২২

দুপুর ও রাতে কখন খাবার খাবেন, দু’বেলার মধ্যে কতক্ষণ ব্যবধান থাকা উচিত

সময় ডেস্ক :  সময়মত খাবার খাওয়া সুস্থতার জন্য জরুরি ও প্রয়োজনীয়। সঠিক সময় খাবার খাওয়া না হলে শরীর প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পায় না। যা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকলে শরীর দুর্বল হয়ে যায়।

একপর্যায়ে সামগ্রিকভাবে শরীর খারাপ হয়ে যায়। এ জন্য সময়ের খাবার সময়ে খাওয়ার কথা বলে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।

এ ক্ষেত্রে সাধারণত সমস্যা হয় দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়া নিয়ে। দুপুরে কেউ বেলা দুইটার দিকে খেয়ে থাকেন, আবার কেউ ১২টার পরই খান, কেউ কেউ আবার বেলা তিনটার পর দুপুরের খাবার খেয়ে থাকেন। এরপর রাতে আবার কেউ রাত ৯টার দিকে খাবার খান, আবার যাদের রাত জাগার অভ্যাস রয়েছে, তারা আরও পরে খেয়ে থাকেন। এ কারণে দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়ার মাঝের সময় একেক জনের একেকটা হয়ে থাকে। কারও আবার প্রতিদিনই মাঝের বিরতির সময় ভিন্ন হয়ে থাকে।

দুপুর ও রাতের খাবার খাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ে ঠিক কতক্ষণ সময় বিরতি থাকবে, সেই আদর্শ সময় নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এবার তাহলে খাবার খাওয়ার মধ্যবর্তী সময়ের সামঞ্জস্যতার ব্যাপারে জেনে নেয়া যান।

খাবারের মধ্যে সামঞ্জস্য কেন গুরুত্বপূর্ণ: খাবার খাওয়ার পর তা হজমের প্রয়োজন হয় এবং খাবারের পুষ্টি উপাদান ভালোভাবে শোষণ করতে সময়ের দরকার। এ জন্য খাবার খাওয়ার পর ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় প্রয়োজন হয়। এই সময় পাকস্থলী খাবারগুলো হজম করতে সহায়তা করে। এ কারণে একবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পরই খাবার খাওয়া হলে বদহজম, পেট ফোলাভাব ও ওজন বৃদ্ধিসহ নানা সমস্যা হয়ে থাকে। আবার খুব দেরি করে খাওয়ার ফলে ক্ষুধার পরিমাণ অনেক বেশি হবে।

দুপুরে খাবার খাওয়া হলে সেসবের পুষ্টি ব্যবহার করে বিকেল পর্যন্ত শরীরকে বহন করে থাকে। আবার দুপুরের খাবার খাওয়ার পর রাতের খাবারের সময় যদি খুব কাছাকাছি হয়, তাহলে শরীর পুষ্টি গ্রহণের যথেষ্ট সময় পায় না। আবার বিরতির সময় খুব বেশি দীর্ঘায়িত হলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাবে, শরীর ক্লান্ত, বিরক্ত ও মানসিকভাবে মনোযোগ হারিয়ে ফেলার মতো সমস্যা হয়। এ কারণে এক খাবার থেকে আরেক খাবারের মধ্যবর্তী সময়ের আদর্শ সামঞ্জস্য প্রয়োজন।

খাবার খাওয়ার সামঞ্জস্যতা বিপাককে নিয়ন্ত্রণ করে, যে প্রক্রিয়ায় শরীর খাদ্যকে শক্তিতে রূপান্তর করে। খাবার গ্রহণের মধ্যে ব্যবধান সঠিক হলে শরীর অনুমানযোগ্য ছন্দ তৈরি করে, যা রক্তে শর্করার বৃদ্ধি বা হ্রাস রোধ করে। দুপুরে খাবার খাওয়ার পর খুব কাছাকাছি সময় রাতের খাবার খাওয়া হলে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চয় হতে পারে, আবার বেশি বিরতি নিয়ে রাতের খাবার খেলে বিপাককে ধীর করে দিতে পারে। যা থেকে হজমে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে ঘুমের কাছাকাছি সময় খাবার খাওয়া হলে।

আপনি রাতে কখন খাবার খাচ্ছেন, তা ঘুম নির্ধারণ করে। দীর্ঘ বিরতি নেয়া ও পরে রাতের খাবার খাওয়ার ফলে অস্বস্তি হতে পারে। অ্যাসিড রিফ্লাক্স অনুভব করতে পারেন বা ঘুমানোর সময় শরীর খাবার হজমের জন্য অস্থির হয়ে উঠতে পারেন।

কীভাবে খাবারের সময় নির্ধারণ করবেন: প্রচলিত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চাকরি করা ব্যক্তিদের জন্য দুপুরের খাবার প্রায়ই দুপুর ১২টা থেকে ১টার মধ্যে খাওয়া হয়। আর রাতের খাবার প্রায় ৬টা থেকে রাত ৭টার মধ্যে খাওয়া হয় তাদের। এ ক্ষেত্রে যাদের কাজের সময় অনিয়মিত, তাদের কাজ অনুযায়ী সামঞ্জস্য করে নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে। শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সক্রিয় বা ক্রীড়াবিদদের খাবারের মধ্যে কিছুটা ব্যবধানের প্রয়োজন হতে পারে। কেননা, তাদের শরীর দ্রুত ক্যালোরি পোড়ায়, এ জন্য তাদের আরও ঘন ঘন পুষ্টির প্রয়োজন হয়। তবে যারা বসে থাকা কাজ করেন, তাদের খাবার গ্রহণের মধ্যে দীর্ঘ বিরতি নেয়ার প্রয়োজন হয়। আবার দুপুরে আপনি কোন ধরনের খাবার গ্রহণ করছেন, তার ওপর নির্ভর করে রাতের খাবার কত তাড়াতাড়ি খেতে হবে।

দুপুর ও রাতের খাবারের মধ্যে কীভাবে আদর্শ সময়ের ব্যবধান বজায় রাখা যায়: ক্ষুধা অনুভব করছেন কিনা, সেদিকে মনোযোগ দিন। যদি রাতের খাবার খাওয়ার আগে ক্ষুধার্ত অনুভব করেন, তাহলে বিবেচনা করুন যে, দুপুরে সুষম ও ক্যালোরি সমৃদ্ধ খাবার খেয়েছেন কিনা। ব্যস্ততার জন্য দুপুরের খাবার ও রাতের খাবারের মধ্যে ৬ ঘণ্টার বেশি সময় বিরতি থাকে, তাহলে এই সময়কে সেতুবন্ধন করতে মাঝে বাদাম, ফল বা দইয়ের মতো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে পারেন। চাইলে হালকা নাশতাও সেরে নিতে পারেন। প্রয়োজনে কাজের সঙ্গে মিলিয়ে রুটিন সামঞ্জস্যপূর্ণ করে সেট করুন।